Skip to main content

Posts

"বাঙালী জাতীয়তাবাদ" - আলী রিয়াজ

১। গত শতকে সত্তর ও আশীর দশকে একটি প্রশ্ন অত্যন্ত প্রবলভাবে আমাদের সমাজ-জীবনকে নাড়া দিয়েছিলো, তা হলো ‘আমরা বাঙালী না মুসলমান?’ প্রশ্নটি উত্থিত হয়েছিলো এমনি একটি জটিল, সংক্ষুব্ধ ও উল্ল্যেখযোগ্য সময়ে যে, তা আমাদের ইতিহাসকে একটি আলাদা পথে পরিচালিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি ক্রান্তিলগ্ন ছাড়াও বাঙালী মুসলমানের জন্যে তা ছিলো আত্মানুসন্ধান ও নব-জাগরণের কাল। বাঙালী মুসলমানরা তাঁদের বিগত ইতিহাসের প্রত্যন্ত প্রদেশে প্রবিষ্ট হয়ে একটি আত্মপরিচয় নির্মানের জন্যেই এই জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে বাধ্য হয়েছিলেন। স্বধর্মচেতনা থেকে এই প্রশ্নের উদ্ভব হলেও প্রকৃতপক্ষে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ও পশ্চাদমুখী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বের সংকট এতো সুতীব্র হয়ে উঠেছিলো যে ঐ প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া ছাড়া তার আর গত্যন্তর ছিলো না। স্বেচ্ছায় বা পরিবেশের প্রভাবে প্রতিটি জাতিকেই জাতী জাগরণের কোনো না কোনো পর্যায়ে, ঐতিহাসিক ধারার কোনো কোনো স্তরে আত্মপরিচয়ের এই মৌলিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। জাতীয় জাগরণের প্রভূত প্রয়োজনের মুখে বাঙালী মুসলমানরাও সেই অবস্থাটিই প্রত্যক্ষ করেছেন গত শতকের সত্তর ও আশীর দশকে। বাঙালী মুসলমানদের ইতিহাস ও ন...

চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচানোই চ্যালেঞ্জ

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহ সংকট দূর করার লক্ষ্যে প্রণোদনামূলক আর্থিক সহায়তাদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের বিলুপ্ত এবং বিলুপ্তপ্রায় সিনেমা হলগুলো পুনর্জীবনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এরূপ ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে বর্তমান সরকার বিভিন্ন সময়ে চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন রকমের আর্থিক প্রণোদনামূলক কর্মসূচিও গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিককালে সিনেমা হল সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে চলচ্চিত্র শিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। বর্তমানে চলচ্চিত্র শিল্প এক বিরাট হুমকির সম্মুখীন। সাদা চোখে মনে হয় তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষই চলচ্চিত্র শিল্প বিকাশের অন্তরায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পটি এখন প্রায় ‘জাদুঘরের সামগ্রী’তেই পরিণত হয়েছে! চলচ্চিত্রের ভালো-মন্দের সব দায় চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট মহলকেই নিতে হবে। পূর্বে রাষ্ট্র চলচ্চিত্রের প্রতি উন্নাসিক থাকলেও তখন মানসম্মত চলচ্চিত্র ছিল। অথচ বর্তমান সরকার নানারূপ প্রণোদনা প্রদানের পরও এই শিল্পটি ক্রমেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে! চলচ্চিত্র শক্তিশালী শিল্প ও গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। আমাদের দেশে সর্বসাধারণের সহজ বিন...

“মাত্র ত্রিশ লক্ষ মারা গেছে…”

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শেষ হবার ঠিক বিশ দিন আগে,  ২৬ নভেম্বর ১৯৭১ 'এ যুক্তরাজ্যভুক্ত উত্তর-আয়ারল্যান্ড থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা পিস নিউজ এর এক প্রতিবেদনে, কেবলমাত্র পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও শাসনযন্ত্র দ্বারা সৃষ্ট খাদ্যাভাবের ফলেই বাংলাদেশে ৩০ লক্ষ সম্ভাব্য মৃত্যুর পূর্বাভাস দেয়া হয়। এই প্রতিবেদনে এমনকি ১৯৭৩-৭৪ সালের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের ব্যাপারেও ভবিষ্যদ্বানী করা হয়। পিস নিউজের মূল প্রতিবেদনটি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত করেছেন-  শোভন রেজা , গবেষণা সহকারী, BRI.   দুর্যোগের পূর্বাভাসকারীরা প্রায়শই একটা জটিল ধাঁধায় আটকে যান, বিশেষত দুর্ভিক্ষ পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে। তারা যদি তাদের ভয়ঙ্করতম অনুমানটি প্রকাশ করতে চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের দেখা হয় আতঙ্ক-সৃষ্টিকারী হিসেবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে অনুমান সত্য প্রমাণিত হয়। বাংলা দেশে সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের পর, ফ্লিট স্ট্রিট (লন্ডন শহরের মিডিয়াপাড়া) হয়তো ১৯৭৪ সালের কোনো এক সময়ে মন্তব্য করে বসতে পারে যে “...মোটে ত্রিশ লক্ষ মারা গেছে …”; অবশ্য বর্তমান অনুমান হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। তবে, পূর্বাভাসকারীটি যদি কিছুই না বলেন, তাহলে তিনি তার ...

PARTITION or UNITY? BENGAL in 1947

 PARTITION or UNITY? BENGAL in 1947 Louis Mountbatten discusses the partition plan with Jawaharlal Nehru and Mohammad Ali Jinnah in 1947. Between May 9 and 14, 1947, in Sodepur near Calcutta, Mahatma Gandhi had a fascinating set of conversations with Hindu and Muslim leaders of Bengal. Sarat Chandra Bose (seen in photograph with Gandhi) explained to him the ethics underlying the effort to preserve the unity of Bengal based on an equitable sharing of power between the two major religious communities. Gandhi told Abul Hashim on May 10 that he was trying to become a Bengali and that he was learning Bengali to be able to appreciate the poems of Rabindranath Tagore in the original. Hashim mentioned that Bengali Hindus and Muslims alike revere the poet. Gandhi argued that the spirit of the Upanishads connected Rabindranath to the entire corpus of Indian culture. If Bengal voluntarily wanted to be associated with the rest of India, Gandhi enquired, what might Hashim have to say about that...

India ভারতকল্পনা এবং এই দেশ

                                   India ভারতকল্পনা এবং এই দেশ ১৯৪৭-এর পর ভারতের জনগণের যে সাংবিধানিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হল, তার ভিত্তি কিন্তু এ দেশের ইতিহাসে নিহিত ছিল না। রচয়িতা: স্বাধীন দেশের সীমান্ত-নির্ধারণ বৈঠকে (বাঁ দিক থেকে) আবদুর রাব নিশতার, বলদেব সিংহ, জে বি কৃপালনী, বল্লভভাই পটেল, এরিক মেলভিল, জওহরলাল নেহরু, লর্ড মাউন্টব্যাটেন, লিয়াকত আলি খান, দিল্লি, ৭ জুন ১৯৪৭। প্রশ্ন: আপনার সাম্প্রতিক বই দ্য ট্রুথস অ্যান্ড লাইজ অব ন্যাশনালিজম: অ্যাজ ন্যারেটেড বাই চার্বাক আক্ষরিক অর্থে অ-সাধারণ। আপনি বলেছেন এখানে আপনি ‘লেখক’ নন, ‘সম্পাদক’। লেখক বা কথক হলেন প্রাচীন ভারতের দার্শনিক চার্বাক। যেন চার্বাকের একটি পাণ্ডুলিপি এটি। চরম যুক্তিবাদী চার্বাক প্রাচীন কাল থেকে এ কালে এসে দেখছেন, আজকের ভারতে জাতিত্ব নিয়ে মিথ্যা প্রচারের শেষ নেই। সেই প্রচারের কোনগুলি বিকৃত, কোনগুলি ‘মিথ্যা’, ‘সত্যি’গুলিই বা কী রকম— এ সবই বইয়ের আলোচ্য। স্বাধীন ভারতের ৭৫তম জন্মদিনে পৌঁছে আমাদের জানতে ইচ্ছে করে যে, কী বলেন চার্বাক, এর মধ্যে ...